সংবাদ শিরোনাম
আখাউড়ায় মুসলমানদের সহযোগিতায় শ্মশান উদ্ধারে সর্বত্র উচ্ছ্বাস

আখাউড়ায় মুসলমানদের সহযোগিতায় শ্মশান উদ্ধারে সর্বত্র উচ্ছ্বাস

স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪-(কসবা-আখাউড়া) নিজ সংসদীয় এলাকার আখাউড়াতে মুসলমানদের সহযোগিতায় হিন্দুদের শ্মশান উদ্ধার হওয়ার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যতম উদাহরণ বলে আখ্যায়িত কয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এম.পি।

গতকাল সোমবার সকালে মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি  এই ঘটনাকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দৃঢ় হচ্ছে বলে আখ্যায়িত করেন।   
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই শ্মশাণে সৎকার করতে না পারার বিষয়টি জেনে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নিয়েছি। শুরুতেই সংশ্লিষ্টদের সাথে নিয়ে আলোচনা করেছি। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। 
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সব সময়ই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। আমরা সম্প্রীতি প্রিয় মানুষ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে গেছেন। কিন্তু মাঝখানে জিয়া আর বেগম জিয়া সেই সম্প্রীতি নষ্ট করেছেন। এ সময় জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়। এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার আছে বলেই সম্প্রীতি দৃঢ় করার কাজগুলো করা সম্ভব হচ্ছে।’ 
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সকলে মিলে শ্মশান উদ্ধারের ঘটনাটি নিশ্চয় সারাদেশের মানুষের কাছে একটা ম্যাসেজ হিসেবে যাবে। শুধু এটি নয় হিন্দু ধর্মালম্বীদের অন্য ধমর্ীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষায়ও আমি সজাগ আছি। এ বিষয়ে সব ধরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে উপজেলার রুপি গ্রামের শ্মশান উদ্ধারের ঘটনাকে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবে দেখছেন আখাউড়ার সর্বস্তরের মানুষ। শ্মশান উদ্ধারের ঘটনায় মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আখাউড়ার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
আখাউড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক দীপক কুমার ঘোষ বলেন, ‘শ্মশান উদ্ধারের ঘটনাটি সারাদেশে একটি নজির হয়ে থাকবে। শ্মশান উদ্ধারে মূলত সেখানকার মুসলমানরাই এগিয়ে এসেছে। ঘটনা জানার পর তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়ায় আমরা বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের প্রতি। এছাড়া আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও ইউএনও’র প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই তঁারা যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে শ্মশানটি উদ্ধারে ভূমিকা নিয়েছেন।       
আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মোঃ তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘শ্মশাণটির উদ্ধার তৎপরতা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা অনন্য উদাহরণ। আমাদের এলাকা আইনমন্ত্রীর সংসদীয় এলাকা। এখানে কেউ সম্প্রীতি বিনষ্ট করে রক্ষা পাবে না। উদ্ধারের বিষয়টি জানার পর মন্ত্রী মহোয়দয় খুবই খুশি হয়েছেন। মহৎকাজে সহযোগিতাকারিদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।’ 
যেভাবে উদ্ধারঃ- ৮২ শতাংশের ওই শ্মশাণ উদ্ধারে শুরু থেকে ভূমিকা মুসলমানদের সম্প্রদায়ের মানুষের। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে রুটি গ্রামের বেশ কয়েকজন মুসলমান ব্যক্তি শ্মশাণ দখল বিষয়ে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক তাকজিল খলিফা কাজলকে অবহিত করেন। পরবতর্ীতে মুসলমান সম্প্র্রদায়ের লোকজন স্থানীয় কয়েকজন হিন্দুকে নিয়ে মেয়রের কাছে আসেন ও এ বিষয়ে অবগত করেন। এরই মধ্যে সার্বিক বিষয় অবগত করা হয় আইনমন্ত্রীকে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে প্রশাসনিকভাবে উদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া হয়। কাগজপত্র ঘেঁটে জায়গাটি শ্মশাণের নিশ্চিত হওয়ার পর গত রোববার দুপুরে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। সংশ্লিষ্টদেরকে সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-এ-আলম সেখানে গিয়ে প্রথমে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। পরে তিনি জায়গার মালিক দাবিকারিদেরকে কাগজ দেখাতে বললে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে লাল নিশান টানিয়ে দেয়া হয়। পরে স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন শ্মশাণের নামে দু’টি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন।
আখাউড়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রসুল আহমেদ নিজামীও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর। 

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com